মূল পাতা জাতীয় নির্বাচন কমিশন একা ইসির পক্ষে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয় : সিইসি
রহমত ডেস্ক 12 June, 2022 05:38 PM
প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা বলেছেন, বর্তমানে যে সিস্টেম আছে এতে খুব বেশি ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তবে এই সিস্টেমটা কম-বেশি হতে পারে। দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, ঐকমত্য না থাকলে আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা কষ্টকর হবে। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আগামী নির্বাচন ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারব। আপনারা নির্বাচনের ভেতরের এবং বাইরের চ্যালেঞ্জের কথা জানবেন। আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আগামীতে আরও ভালো নির্বাচন করার চেষ্টা করব। সবগুলো নির্বাচন সফল করতে আমরা নানানভাবে চেষ্টা করব।
আজ (১২ জুন) রবিবার বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপে যোগ দেন সাবেক সিইসি বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ, ড. এটিএম শামসুল হুদা ও কেএম নূরুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ, সাবেক সচিব মোহাম্মদ সাদিক, জেসমিন টুলি, মো. আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন। গত মার্চ থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান ইসি বিভিন্ন মহলের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ করছে। গত ১৩ ও ২২ মার্চ এবং ৬ ও ১৮ এপ্রিল যথাক্রমে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজ এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক/সিনিয়র সাংবাদিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী/প্রধান বার্তা সম্পাদক/সিনিয়র সাংবাদিকদের সংলাপ করে ইসি।
সিইসি বলেন, অতিথিরা বলেছেন, বর্তমানে যে সিস্টেম চলছে সেটা একটু কম বেশি হতে পারে। এই সিস্টেমে খুব বেশি ভাল করা সম্ভব নয়। আমরা যদি দৃঢ় থাকি, আইন দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি, তাহলে অনেকটা উন্নয়ন সম্ভব। সাবেক সিইসি বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ প্রার্থী অনুযায়ী নয়, দলভিত্তিক নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচনে দেখা গেল যে অনেক আগে থেকে দলগুলো তাদের টোটাল প্রার্থীর নাম দিয়ে যাবে। সবাই তিনশ আসনে প্রার্থী দিল। পার্টি ক, খ, গ, ঘ। যে যত ভোট পেয়েছে, সেভাবে আসন পাবে। এই ধরণের একটা সিস্টেম আছে। তবে এটা আমাদের বিষয় নয়। দলগুলোকেই দেখতে হবে। বর্তমান যে আইনি কাঠামো ও সাংবিধানিক কাঠামো আছে এর মধ্যেই আমাদের নির্বাচন করতে হবে। কেউ কেউ বলেছেন একাধিক দিনে নির্বাচন করলে আইন-শৃঙ্খলা মোতায়েন সহজ হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। কেউ কেউ বলেছেন এতে সমস্যাও হবে। এ নিয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। কাজেই একাধিক দিনে নির্বাচন করলে আমাদের জন্য অসুবিধাও হতে পারে। ওই ধরণের প্রস্তুতি আমাদের নেই।
তিনি বলেন, এখনো দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করিনি। সবাই বলেছেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচন যদি ইনক্লুসিভ না হয়, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাস্তব অর্থে থাকবে না। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনেকটা নষ্ট হেয়ে গেছে। এই কালচারের মধ্যে কিছু ইতিবাচক গুণ আনতে হবে। তাদের মধ্যে পরম সহিষ্ণুতা, ঐকমত্য যদি না থাকে নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে খুব ভাল নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, ঐকমত্য না থাকলে আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা কষ্টকর হবে। এটা আমরা যেমন আগে বলেছি, উনারাও বলেছেন।
তিনি আরো বলেন, দ্রুত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করব। যখন মতবিনিমিয় করব আমরা সাজেশন চাইব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আরও ভাল পদ্ধতিগত কী পরিবর্তন করা যেতে পারে সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তা চাইব। ব্যক্তি নয়, সিস্টেম যদি উন্নত করতে পারি, নির্বাচন অনেক বেশি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আকম বাহাউদ্দিনকে ভোটের এলাকা ছাড়ার চিঠি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি, আমাদের কিছু আইনগত দিক আছে। কিছু ক্ষমতা আংশিক, কিছু পরিপূর্ণ। কুমিল্লায় যা বলা হয়েছে- সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনী এলাকায় থাকতে পারবেন না। ওই এলাকার সংসদ সদস্য এই আচরণ বিধি ভঙ্গ করছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে, আমরা এলাকা ছাড়তে বলেছি। উনি এলাকা ছাড়েননি। তিনি মামলা করেছেন, আমরা ফলাফল পাইনি।